বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধের নাম এবং বাচ্চাদের গুড়া কৃমির লক্ষণ

বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধ সম্পর্কে জানতে আপনারা সার্চ করেছেন। এবং বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধ খাওয়ার সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়েছেন। কি কি কারণে বাচ্চাদের গুড়া কৃমি হয় আজকের আর্টিকেলে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।বাচ্চাদের কমন একটি অসুখ হলো গুড়া কৃমি যা প্রায় বাচ্চাদের এই অসুখে ভুগে থাকে। তাছাড়াও বড় থেকে ছোট প্রায় সবাই গুড়া কৃমিতে আক্রান্ত হয়।

এইজন্য ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে খুব সহজেই গুড়া কৃমি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাছাড়াও গুড়া কৃমির বেশ কিছু ওষুধ রয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।কোন নিয়মে বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধের নাম - এবং বাচ্চাদের গুড়া কৃমির লক্ষণ জেনে নিন

বাচ্চাদের গুড়া কৃমি কেনও হয়

আপনারা অনেকে এই প্রশ্নটি করে থাকেন যে বাচ্চাদের গুড়া কৃমি কেন হয় এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়েছেন। গুড়া কৃমি প্রতিরোধ করতে হলে আগে জানতে হবে গুড়া কৃমি কিজন্যে হয়। শিশুরা প্রায় সময়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে, যার মধ্যে অন্যতম একটি রোগ হলো গুড়া কৃমি।কৃমি সাধারণত মাটিতে ডিম পাড়ে, যা শাকসবজি বা অন্যান্য খাদ্যের মাধ্যমে শিশুদের শরীরে প্রবেশ করে। 
কারণ অনেক সময় শাকসবজি ভালোমতো পরিষ্কার না করার ফলে অথবা ভালোভাবে রান্না করা না হলে শিশুদের কৃমি রোগে আক্রান্ত হয়। তাছাড়াও একটি বাচ্চা কৃমি রোগে আক্রান্ত হলে তার সাথে অন্যান্য বাচ্চারা খেলাধুলা বা স্কুলে পড়াশুনা করার জন্য একসাথে হলে কৃমি আক্রান্ত হয়। তাহলে চলুন আরো বিস্তারিত জেনে নিন, কি কি কারণে বাচ্চারা কৃমি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে জেনে আসি।
  • বাচ্চারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে কৃমি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • বাচ্চারা খালি পায়ে টয়লেট ব্যবহার করলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • বাচ্চারা মলত্যাগ করার পরে ভালোভাবে হাত না ধুলে কৃমি রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
  • খাবার খাওয়ার আগে বাচ্চারা ভালোভাবে হাত না ধুলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • দূষিত পানি ব্যবহার এবং বাচ্চাদের পানি ফুটিয়ে না খাওয়ালে কৃমির সংক্রমণ হতে পারে।
  • বিভিন্ন ধরনের ফলমূল না ধুয়ে বাচ্চাদের খাওয়ালে কৃমি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
  • হাতের নখ বড় হলে ওই লখে কৃমি ডিম পাড়ে। এবং খাবারের সঙ্গে কৃমির ডিম পেটে গিয়ে সংক্রমণ সৃষ্টি করে।
  • স্কুলের একটি বাচ্চার কৃমি রোগে আক্রান্ত হলে অন্যান্য বাচ্চারা ওই বাচ্চার সংস্পর্শে আসলে ওরা ও কৃমি রোগে আক্রান্ত হয়।
  • বাসায় যদি একজন ব্যক্তির কৃমি রোগে আক্রান্ত হয় তবে পরিবারের সবার কৃমির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন ধরুন খোলা স্থানের মাছি বসা খাবারে কৃমি ডিম পারে, যার ফলে ওই খাবার খেলে বাচ্চারা কৃমি রোগে আক্রান্ত বেশি হয়।
  • বর্তমান সময়ে বাচ্চারা সবচেয়ে বেশি কৃমি রোগে আক্রান্ত হয়, যার কারণগুলো বাচ্চারা খাবার খাওয়ার সময় ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে না ধুয়ে খাবার খায়, যার ফলে বাচ্চাদের কৃমির সংক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাচ্চাদের গুড়া কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়

শিশুদের গুড়া কৃমি হওয়া খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু এই সমস্যাটা কি ছোট করে দেখা উচিত নয়। প্রায় সব শিশুরাই কমবেশি কৃমি রোগে সংক্রান্ত হয়। সবচেয়ে বেশি ফিতা কৃমি এবং সুতা কৃমিতে বাচ্চারা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। বাচ্চাদের পেটে গুড়া কৃমি যখন অনেক বেশি পরিমাণে হয় তখন বাচ্চাদের শারীরিক গঠন অথবা অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইজন্য ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে বাচ্চাদের গুড়া কৃমি প্রতিরোধ করতে পারেন। 
এর জন্য আপনাদের কিছু কাজে পরিবর্তন আনতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি করুন এবং কাঁচা ফল এবং সবজি না ধুয়ে বাচ্চাদের দেওয়া উচিত নয়। খালি পায়ে মাটিতে হাঁটা চলা অথবা দূষিত পানি পান করলে, বাচ্চারা কৃমি রোগে আক্রান্ত হবে। ঘরোয়া কিছু উপকরণ দিয়ে খুব সহজে গুড়া কৃমি দূর করা যায়, তাহলে চলুন জেনে আসি উপকরণ গুলো কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • হলুদঃ হলুদ আমরা প্রায় সবাই চিনি। কারণ তরকারি রান্নার প্রধান উপকরণের মধ্যে অন্যতম একটি উপকরণ হলো হলুদ। এই উপাদানটি প্রায় সবারই রান্নাঘরে রয়েছে। তাছাড়াও কাঁচা হলুদের এন্টিবায়োটিক গুনে সমৃদ্ধ রয়েছে, এইজন্য হাতের নাগালের মধ্যে থাকা এই সহজ উপকরণ দিয়ে আপনি ঘরোয়া উপায়ে গুড়া কৃমি দূর করতে পারবেন খুব সহজে। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ হলুদ গুঁড়া এক চিমটি লবণ দিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার কৃমি গুলো ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। তাছাড়াও আপনি আরেকটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। সকালে গরম ভাতের সঙ্গে এক চামচ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন, এত ভালো উপকার পাওয়া যায়।
  • রসুনঃ কাঁচা রসুনে সালফারযুক্ত অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান রয়েছে। নিয়মিত কাঁচা রসুন খাওয়ার ফলে পেটের কৃমি খুব সহজেই দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিয়মিত দুই থেকে তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেলে আপনার শরীরের কৃমি ধীরে ধীরে কমে যাবে।
  • নিম পাতাঃ নিম পাতা অত্যন্ত তেঁতো জাতীয় একটি উপাদান। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কৃমি দূর করার প্রধান উপাদান হলো তেঁতো জাতীয় খাবার কৃমি দূর করার বিকল্প কোন খাবার নেই তেঁতো খাবার ছাড়া। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস নিম পাতার রস খেলে কৃমি দূর হবে।
  • কাঁচা পেঁপেঃ আপনারা অনেকেই অবাক হবেন যে কাঁচা পেঁপে এবং কাঁচা পেঁপের বীজ খেয়ে কৃমি দূর করা সম্ভব। তাছাড়াও মধু সঙ্গে কাঁচা পেঁপে ও পেঁপের বীজের গুড়া একসঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন খেতে পারলে কৃমি থেকে সমাধান পাওয়া সম্ভব।
  • আনারসঃ আনারসে থাকা ব্রােমেলিন নামক এনজাইম থাকার কারণে খুব সহজেই কৃমি কে মেরে ফেলতে পারে। আপনি যদি কৃমি মেরে ফেলতে চান তাহলে অবশ্যই চার থেকে পাঁচ দিন নিয়মিত খালি পেটে সকালে আনারস খেতে পারেন এতে কৃমি একেবারে মরে যাবে।
  • করলাঃ আমরা সবাই জানি করলা তেঁতো জাতীয় একটি সবজি। কৃমি দূর করার জন্য খুব উপকারী একটু উপাদান। কৃমি দূর করার জন্য প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করলা জুস খেতে পারেন, এতে কৃমি কমে যাবে।
  • গাজরঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন, কারণ গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ ভিটামিন সি আরো অন্যান্য উপাদান থাকার কারণে কৃমি হওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • কুমড়োর বীজঃ কুমড়ো বীজের গুঁড়ো কৃমি প্রতিরোধ করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কুমড়ো বীজের গুঁড়ো এক চামচ নিয়ে এক কাপ পানিতে কয়েক মিনিট ফুটিয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন পান করলে কৃমি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • লবঙ্গঃ আমরা প্রায় কমবেশি সবাই জানি লবঙ্গের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো কৃমির প্রতিরোধ করতে লবঙ্গ খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। লবঙ্গ গুঁড়ো অথবা লবঙ্গ দিয়ে নিয়মিত চা বানিয়ে খেতে পারলে কৃমি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাছাড়াও আপনারা চাইলে প্রতিদিন এক থেকে দুইটি লবঙ্গ চুষেও খেতে পারে, এতেই উপকার পাওয়া যায়।

বাচ্চাদের গুড়া কৃমি হওয়ার লক্ষণ

কৃমি এক ধরনের পরজীবী যা মানুষের শরীর থেকে পুষ্টি উপাদান গুলো শোষণ করে বেঁচে থাকে। এবং খুব সহজে বংশবিস্তার করে থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে কৃমির সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে যেগুলো বাচ্চারা স্কুলে যাওয়া আসা করে তাদের সম্পূর্ণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। বাচ্চারা কৃমি রোগে আক্রান্ত হলে বা কৃমি রোগের সক্রমণ বেড়ে গেলে বাচ্চাদের যেসব লক্ষণগুলো দেখা যায়। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন যে আপনার বাচ্চা কৃমি রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন। আজকে আমরা এ বিষয় নিচে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
  • হঠাৎ করে বাচ্চাদের ওজন কমে যায়।
  • বাচ্চাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
  • বমি বমি ভাব ও পেট ব্যথা দেখা দেয়।
  • মলদ্বার একটু পর পর চুলকানি শুরু হয়।
  • শুকনো কাশি ও বমি হয়।
  • মলদ্বারে চুলকানি হওয়ার কারণে বাচ্চাদের ঘুম কমে যায়।
  • খাবারের রুচি কমে আসে এবং খাবার খাওয়াতে অনীহা দেখা দেয়।
  • বাচ্চাদের অতিরিক্ত কৃমি হওয়ার কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
  • হজমে সমস্যা ও ডায়রিয়া দেখা দেয়।
  • বাচ্চারা ঘনঘন মলত্যাগ করতে যায়।
  • মেয়ে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে প্রসাবে ইনফেকশন হয়।এবং প্রসাবে জ্বালাপোড়া দেখা দেয়।

বাচ্চাদের গুড়া কৃমি প্রতিরোধে করণীয়

বাচ্চাদের গুড়া কৃমি হলে প্রতিরোধ করার অত্যন্ত জরুরী।কেননা বাচ্চাদের অতিরিক্ত কৃমি হলে শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, পেট ব্যথা বমি ভাব ডায়রিয়া এবং আরো বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করে।কৃমি সনাক্ত করার পরে জরুরী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চা কে ওষুধ খাওয়ানো অত্যন্ত জরুরি। আরো বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাছাড়াও কৃমি দূর করার আরো ঘরোয়া কিছু প্রাথমিক উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে নিরাময় করা অত্যন্ত সহজ হয়। যেমন ধরুন বাচ্চাদের নখ বড় হওয়ার সাথে সাথে কেটে ফেলা উচিত বাচ্চাদের খালি পায়ে চলাফেরা করতে দেয়া উচিত নয়। 
মলত্যাগ করার পরে এবং খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়ার আগে ভালো করে পানিতে ধুয়ে খাওয়া উচিত। তাছাড়াও বাচ্চাদেরকে সব সময় নিরাপদ পানি পান করানো উচিত। মিষ্টি জাতীয় খাবার বাচ্চাদেরকে কম খাওয়াবেন, কারণ মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে কৃমি সংক্রমণ বেড়ে যায়। তাছাড়াও বাচ্চাদেরকে নিয়মিত তিন থেকে চার মাস পর পর বাচ্চাদের কৃমির ওষুধ সেবন করানো উচিত। ছোট বাচ্চাদের কি কি কৃমির ঔষধ খাওয়ানো উচিত সে সম্পর্কে আমরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এবং ওষুধের নাম গুলো উল্লেখ করা থাকবে।

বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধের নাম

বাচ্চাদের খালি পায়ে হাঁটাচলা করা অপরিষ্কার জিনিসপত্র নিয়ে খেলাধুলা করার কারণে কৃমি সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া যেসব বাচ্চারা স্কুলে যাওয়া আসা বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য থেকে কৃমি সংক্রমণ থেকে আক্রমণ হয়। সাধারণত বাচ্চা শিশুরা গুড়া কৃমিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। আপনার বাচ্চা যেকোনো কৃমিতে আক্রান্ত হোক না কেন জানার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কৃমির ঔষধ ডাক্তার দেওয়ার আগে অবশ্যই বাচ্চার ওজন এবং বয়স সম্পর্কে জানবে তারপরে আপনাকে ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিবেন। 

ওষুধ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই একটা কথা মাথায় রাখবেন বাচ্চাকে ওষুধ খাওয়ানোর সময় পরিবারের সবাই বা সকল সদস্যকে কৃমির ঔষধ সেবন করতে হবে তাছাড়া এই ওষুধ বাচ্চার কোন কাজে আসবে না। তাছাড়াও আজকে মূল আলোচনা গুড়া কৃমির ঔষধ সম্পর্কে, ডাক্তাররা সাধারণত কৃমির জন্য যেসব ঔষধ দিয়ে থাকেন। তাহলে চলুন গুড়া কৃমি হলে বাচ্চাদেরকে কি কি ঔষধ খাওয়াবেন, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
  • লিভোমিসোলঃ এই ওষুধটি বাচ্চাদের ওজনের ওপর দেওয়া হয়। তবে এই ওষুধটির বাজারে অন্য একটি নামও রয়েছে তা হলো কেটেক্স। বাচ্চাদের ওজন প্রতি তিন মিলিগ্রাম নির্ধারণ করে এই ডোর্জটি দেওয়া হয়। তবে সবচেয়ে ভালো হবে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই ওষুধটি বাচ্চাদেরকে নিয়মিত সেবন করানো।
  • পাইরেনটাল পামোয়েটঃ এই ওষুধটি মেলফিন ডিলেটিন নামে বাজারে পাওয়া যায়। এই সিরাপটিও শিশুর ওজনের উপর নির্ধারণ করা হয়। এক বছরের বেশি বয়সের শিশুদের জন্য এই ওষুধটি ১১ মিলিগ্রাম হিসেবে ডোর্জ নির্ধারণ করে চিকিৎসকরা।বাচ্চাদের অতিরিক্ত পরিমাণে গুড়া কৃমি হলে এই ডোর্জটি দুই সপ্তাহ পরও একই মাত্রায় দেওয়া যায়। তবে আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাদেরকে ওষুধ সেবন করাবেন।
  • মেবেনন্ডাজোলঃ এই ওষুধটি বাজারে সিরাম বা ক্যাপসুল হিসেবে পাওয়া যায়। তবে দুই বছর বা তিন বছর শিশুদের গুড়া কৃমি হলে এই ওষুধটি খাওয়ার পরামর্শ দেয় চিকিৎসকরা। গুড়া কৃমি প্রতিরোধ করতে খুবই কার্যকরী। এই ওষুধটি আপনার শিশুকে দিনে ২বার ১চামচ করে খাওয়াতে পারেন ৩দিন পর্যন্ত।
  • অ্যালবেনডাজলঃ এই ওষুধটিও বাজারে আপনারা ঔষধ বা সিরাপ হিসেবে পাবেন। তবে এই ওষুধটিরও বাজারে ভিন্ন নামে পরিচিত যেমন ধরুন এনবেল, সিনটেল।আপনার বাচ্চার যদি দুই বছরের বেশি বয়স হয় তবে ২ চামচ সিরাপ দিনে ১বার খাওয়াতে হবে। এরপরও যদি সংক্রমণ থেকে যায় তাহলে তিন সপ্তাহ পরে আবার একই নিয়মে এই ওষুধটি খাওয়াতে পারে।

বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর সঠিক নিয়ম

শিশুদেরকে নিয়মিত কৃমির ঔষধ খাওয়ানো অত্যন্ত জরুরী।কেননা কৃমির ওষুধ নিয়মিত না খাওয়ালে বাচ্চাদের কৃমির সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় যার ফলে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বাচ্চাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটাতে বাহাত ঘটায়। উপরোক্ত আলোচনা আমরা বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি,এবার আমরা বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। কৃমির ঔষধ খাওয়ার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। 

অনেকের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে বাচ্চাদের খালি পেটে খাওয়ালে ভালো হয় আবার অনেকে ভাবেন বাচ্চাদের ভরা পেটে খাওয়ালে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আবার অনেকে ভাবেন বাচ্চাদেরকে নিয়মিত কৃমির ঔষধ খাওয়ালে বাচ্চারা দুর্বল হয়ে যায় এই জন্য অনেকেই বাচ্চাদেরকে কৃমির ঔষধ সঠিক নিয়ম অনুসারে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকেন। যা একদমই করা উচিত নয়। সাধারণত একবছরের কম বয়সী শিশুদেরকে কৃমির ওষুধ দেওয়া উচিত নয়। এক বছর বয়সে শিশুদেরকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমির ওষুধ খাওয়ানো উচিত। তাছাড়াও ৬ মাস অন্তর ৬ মাস পর কৃমির ঔষধ খাওয়ানো উচিত। 

বাচ্চারা কৃমি রোগে আক্রান্ত হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন, যে বাচ্চাদের কৃমি সংক্রমণ ঘটেছে। আপনার বাচ্চার যদি কৃমি সংক্রমণ ঘটে থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করাতে হবে। ২ থেকে ৫ বছর বয়সের শিশুদের কে প্রত্যেক ছয় মাস পর পর কৃমিনাশক সব ওষুধ খাওয়া উচিত। কৃমিনাশক ঔষধ সাধারণত বাচ্চাদেরকে খালি পেটে খাওয়ানো উচিত। খালি পেটে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ালে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়। 

তবে প্রয়োজন পড়লে ভরা পেটে এই ওষুধ খাওয়ানো যায়। তবে কৃমি ওষুধ খাওয়ার সঠিক সময় হলো খালি পেটে ঔষধ খাওয়া। কৃমি থেকে মুক্তি পেতে পরিবারের সকল সদস্যকে তিন মাস পর পর কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করা উচিত। আমরা উপরে কৃমির ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আপনারা এই ওষুধগুলো সপরিবারে খেতে পারেন যেকোনো সময়ে গ্রীষ্ম বর্ষা শীত যেকোনো সময়ে খুব সহজে খেতে পারবেন। কৃমির এই ঔষধ গুলোতে কোন সাইড ইফেক্ট নেই। কৃমিনাশক এই ঔষধ খাওয়ার ফলে সব কৃমি মরে যায় এবং লাভা থেকে ডিম পারতে পারে না। 

এই জন্য প্রত্যক ছয় মাস পর কৃমির ঔষধ সেবন করা উচিত।তবে প্রথম ডোজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে যদি নিরাময় না হয় তবে ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে ডক্টররা অবশ্যই আপনাকে ১০ থেকে ১৫ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ খাওয়ার পরামর্শ দিবেন। গুড়া কৃমি নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনাদের উপকারে আসবে। উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করলে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।

লেখকের শেষ কথা বাচ্চাদের গুড়া কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়

সম্মানিত প্রথম বিন্দু বাচ্চাদের গুড়া কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল আশা করছি আপনাদের আর্টিকেলটি করলে উপকার হবে।এই আর্টিকেলে আমার গুড়া কৃমি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কি কি উপকরণ দিয়ে গুড়া কৃমি করা যায়, বাচ্চাদের গুড়া কৃমির ঔষধ, কি কি নিয়ম মানলে গোরা কৃমি দূর করা সম্ভব, গুড়া কৃমি এর ঔষধ খাওয়ার সঠিক সময়, আরো বিভিন্ন বিষয়ে আপনারা ইতিমধ্যে বিস্তারিত জেনেছেন। 

আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন।এমন তথ্যমূলক বা স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। আপনার মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, জুথি আর্টস আইটি সাথেই থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জুথি আর্টস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url