গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
আপনারা কি জানেন গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে স্বাস্থ্যে কি কি উপকার হয়। গর্ভবতী মায়ের জন্য ডাবের পানি অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়। তবে সঠিক নিয়ম অনুযায়ী ডাবের পানি খেলে সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণাগুন পাবেন।
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। সম্পূর্ণ বিষয় জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার অপকারিতা
- ডাবের পানি পুষ্টি গুনাগুন
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া যাবে কি
- গর্ভাবস্থায় ডাবের আঁশ খাওয়ার উপকারিতা
- সকালে ডাবের পানি খেলে কি হয়
- ত্বক ফর্সা করতে ডাবের পানির কার্যকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি ঠান্ডা লাগে
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি প্রেসার বাড়ে
- ডাব খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- লেখকের মন্তব্য গর্ভাবস্থায় ডাব খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া একজন গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ হয়। শরীরে আরো অন্যান্য পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। এইজন্য গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের নবজাতক শিশুর জন্য চিন্তার শেষ নেই। গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার না খেলে শিশুটি পুষ্টিহীনতায় ভুগবে।
এজন্য পরিবারের সকলের দায়িত্ব গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যার মধ্যে অন্যতম একটি পুষ্টিকর খাবার হলো ডাবের পানি। তাহলে চলুন জেনে নিন গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে গর্ভবতী মায়ের ও শিশুর কি কি উপকার হয় সে সম্পর্কে জেনে আসি।
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে শরীরে প্রতিদিনের পানির চাহিদা পূরণ করে। কারণ একজন স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে গর্ভবতী মায়ের পানির চাহিদা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি থাকে।এর কারণ হলো একজন মায়ের পায়ের চাহিদা পাশাপাশি তার অনাগত শিশুর পানি চাহিদা পূরণ করতে হয়। এইজন্য নিয়মিত গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া উচিত।
- আপনারা কি জানেন একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য প্রচুর পরিমাণ ইলেকট্রোলাইট প্রয়োজন পড়ে। কারণ ইলেকট্রোলাইট গর্ভবতী মায়ের শরীর হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। এইজন্য ডাবের পানি অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ ডাবের পানিতে রয়েছে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম এই উপাদানগুলো থাকার কারণে গর্ভবতী মায়ের শরীরে চার্জ করতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থায় অনেক সময় গর্ভবতী মায়ের হজমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে এ সমস্যা দূর হয়।
- গর্ভাবস্থায় একজন মা অনেক দুশ্চিন্তায় থাকেন যার কারণে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় আপনি যদি নিয়মিত ডাব খেতে পারেন। তাহলে আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
- নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে একজন গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- অনেক সময় দেখা যায় একজন গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তের চাপের সমস্যা হয়।এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি নিয়মিত সঠিক পরিমাণে কচি ডাব খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- আপনারা জানলে অবাক হবেন ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস হলো ডাব।আরেকজন গর্ভবতী মায়ের ক্যালসিয়াম কতটা প্রয়োজন আপনারা হয়তো জানবেন। এইজন্য নিয়মিত ডাব খেলে চাহিদা পূরণ হবে।
- নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হবে।
- নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করবে।
- প্রতিদিন নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ডাবে কম ক্যালরি এবং কম মাত্রায় চিনি থাকার কারণে গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশ কমে যায়।
- গর্ভাবস্থায় অনেক রকম সিনটম দেখা দেয় তার মধ্যে অনেকের বুকে জ্বালাপোড়া করে। এতে ডাব খাওয়ার ফলে এ সমস্যা দূর হবে।
- নিয়মিত ডাব ফলে কিডনিতে পাথর হবে না।
- গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের ডাব খাওয়ার ফলে একজন মায়ের রক্ত চলাচল ভালো থাকে।
- নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থায় যদি আপনার ডায়াবেটিস হয়ে যায় তাহলে আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন ডাব খাবেন এতে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্তনে আসবে।
- নিয়ম করে ডাব খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিষাক্ত টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- অতঃপর গর্ভবতী মায়ের দুধের পিএইচ স্তর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মা শিশুর ত্বকের স্থিতিশীল ভালো রাখে।
- গর্ভাবস্থায় পুরো জার্নি জুড়ে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন ডাব খেতে পারেন তাহলে মায়ের দুধ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ডাবের পানি খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি হাতেগোনা কয়েকটি অপকারিতা ও রয়েছে। কারণ কোন কিছুই শরীরের জন্য অতিরিক্ত ভালো নয় তার প্রমান হলো ডাবের পানি। ডাবের পানি প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই খুব উপকারী তবে প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ খেলে তা আবার শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নিন ডাব খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
- ডাবের পানি অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে।
- আমরা অনেকেই কয়েকটা ডাবের পানি একসাথে খেয়ে ফেলি যার ফলে আমাদের ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- যাদের কিডনির সমস্যা তারা অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডাবের পানি খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
- প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ ডাবের পানি খাওয়ার ফলে এলার্জির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
- যাদের হাঁপানি সমস্যা রয়েছে তারা ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তাছাড়াও আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডাবের পানি খাবেন।
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণ ডাবের পানি খাওয়ার ফলে মা ও শিশুর ঠান্ডা লাগতে পারে।
- অতঃপর অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে অনাগত শিশুর জন্মের আগে নিউমোনিয়া হতে পারে। একজন অনাগত শিশুর নিউমোনিয়া হওয়া মৃত্যুর স্বরূপ ঝুঁকি বয়ে আনে।
ডাবের পানি পুষ্টি গুনাগুন
আমরা এতক্ষণ ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে এই আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। ডাবের পানি খাওয়ার যেমন হাজার উপকারিতা রয়েছে তেমনি কিছু উপকারিতা ও রয়েছে। এবার হয়তো আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে ডাবে কি কি পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে।তাহলে চলুন ১০০ গ্রাম ডাবের পানিতে কি কি পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নিন।
উপাদানের নাম | পুষ্টির নাম |
---|---|
পানি | ৯২ শতাংশ |
পটাশিয়াম | ০.২৪ শতাংশ |
ক্যালসিয়াম | ০.৬৮ শতাংশ |
চর্বি | ০.১০ গ্রাম |
আঁশ | ০.৫২ গ্রাম |
প্রোটিন | ০.৬২ গ্রাম |
লৌহ | ০.৫ গ্রাম |
চিনি | ০.৭০ গ্রাম |
নাইট্রোজেন | ০.০৪ শতাংশ |
এসিড | ০.৫৪ শতাংশ |
ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড | ০.৪৯ শতাংশ |
সোডিয়াম | ০.২২ শতাংশ |
ভিটামিন সি | ২৭ গ্রাম |
ফাইবার | ০.১২ গ্রাম |
আইরন | ০.৯ গ্রাম |
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া যাবে কি
আপনারা অনেকেই গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া যাবেনা এটাই জানেন। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা, গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের ডাবের পানি স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। যার উপকার বলে শেষ করা যাবে না। তবে বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে। আপনি যদি নিয়ম মেনে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে পরিমাণ মতো ডাবের পানি খান তাহলে এই অপকারিতা গুলো এড়ানো সম্ভব।
ডাবের পুষ্টিগুণাগুণ একজন মা ও শিশুর বিভিন্ন ধরনের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীর ভালো রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে ডাবের পানি। নবজাতক শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। অনুগত শিশুর হাড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
শুধু তাই নয় একজন চিকিৎসক পরামর্শ দিয়ে থাকেন গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার এতে মা ও শিশুর দুজনে সবকিছু ভালো রাখতে সাহায্য করে বলে জানিয়েছেন। আপনারাও চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার।
গর্ভাবস্থায় ডাবের আঁশ খাওয়ার উপকারিতা
আপনারা গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাব খেয়ে ফেলে দেন, কিন্তু ডাবের ভিতরে থাকা আঁশ না খেয়ে অনেকে ভাবেন গর্ভাবস্থায় ডাবের আঁশ খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হবেন ডাবে যেমন পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে তেমনি ডাবের আঁশে সমান পরিমাণ পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর পুষ্টির যোগান দিতে ডাবের পানি ও আঁশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাহলে চলুন ডাবের আঁশ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
- গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার যদি ডাব খাওয়ার পাশাপাশি ডাবের আঁশ খায় তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের ঘন ঘন ক্ষুদা পায় একজন গর্ভবতী মা যদি তাদের আঁশ খায় তাহলে ঘনঘন ক্ষুদা পাবেনা।
- গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। ডাবের আঁশে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ইত্যাদি আরো উপাদান।
- গর্ভাবস্থায় ডাবের আঁশ খেলে মা ও শিশু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- ডাবে যেমন পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে তেমনি পুষ্টিগুণাগুন ডাবের আঁশেও রয়েছে।
সকালে ডাবের পানি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন। এখন আপনারা প্রশ্ন করেছেন যে সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে কি হয়? তেমন কিছু হয় না বা কোন বিশেষজ্ঞরা কিছু বলেননি। তবে গর্ভাবস্থায় সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে খুবই উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু যে সকল গর্ভবতী মায়েদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা চেষ্টা করবেন একটু বেলা করে ডাবের পানি খাওয়ার।
এতে আপনার ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে মা ও শিশু দুজনই ভালো থাকবেন। এছাড়া আর কোন সমস্যা নেই, সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে পেট পরিষ্কার থাকে। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের সারাদিনের ক্লান্ত ভাব দূর হয় এনার্জি বৃদ্ধি পায়। এবং রক্ত চলাচলের প্রক্রিয়া ভালো থাকে।যে সকল গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থায় ওজন বেড়ে গিয়েছে।
তাদের জন্য সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রনে আসে। কারণ ডাবের পানিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ফাইবার পটাশিয়াম ইত্যাদি এই উপাদানগুলো একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুব প্রয়োজন।
ত্বক ফর্সা করতে ডাবের পানির কার্যকারিতা
আমরা ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছি। কিন্তু আপনারা কি জানেন ডাবের পানি খেয়ে আপনি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারবেন। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়াও গর্ভবতী মায়ের চিন্তা করেন তাদের নবজাতো শিশু দেখতে কেমন হবে।
একজন গর্ভবতী মা যদি নিয়মিত সঠিক পরিমাণে ডাবের পানি খেতে পারে তাহলে মায়ের ত্বকের উজ্জ্বলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। এবং শিশু সুস্থ সবল সুন্দর চেহারার অধিকারী হবে। আপনারা তো জানেন পানি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। আর ডাব তো পানির অংশ তাছাড়া ওই পানির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যার কারণে আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
গর্বের সন্তান ফর্সা হবে কিনা সবই সৃষ্টিকর্তার হাতে তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে ডাবের পানি ও নারকেল গর্ভাবস্থায় খেলে শিশুর গায়ের রং পরিবর্তনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কমলা লেবু আঙ্গুর ফল খেলে উপকার পাওয়া যায়। গবেষণা করে আরো দেখা গিয়েছে দুধের সঙ্গে জাফরান মিশিয়ে খেলে সবচেয়ে ভালো কাজ করে। এই জন্য চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের বিশেষ পরিচর্যা করার।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি ঠান্ডা লাগে
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা ও উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এখন সবাই জানি।কিন্তু অনেকে মনে করেন ডাবের পানি খেলে ঠান্ডা লাগে। এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল ডাবের পানি শরীরে তাপমাত্রা শোষণ করতে খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে হ্যাঁ আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ডাবের পানি খেয়ে ফেলেন, সেক্ষেত্রে আপনার ঠান্ডা লাগা সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকে ভাবেন ডাবের পানির উপকারিতা বেশি এইজন্য বেশি খেলে হয়তো বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে সে ক্ষেত্রে আপনার ঠান্ডা লাগে সম্ভাবনা থাকে।
তাছাড়া আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত সঠিক পরিমাণে ডাবের পানি খান তাহলে আপনার শরীরের স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন। ডাবের পানি আমাদের শরীর ঠান্ডা রাখে, শরীরের পদার্থ বের করতে সাহায্য করে, গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুকে ভালো রাখতে খুবই কার্যকর ডাবের পানি।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি প্রেসার বাড়ে
গর্ভাবস্থায় যাদের উচ্চ ব্লাড প্রেসার রয়েছে। তারা হয়তো ভাবেন যে ডাবের পানি খেলে প্রেসার আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। তবে এই চিন্তায় অনেক গর্ভবতী মা ডাব খাওয়া থেকে বিরত থাকেন, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে আপনার প্রেসার বাড়ার পরিবর্তে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখবে।অথবা যাদের ব্লাড প্রেসার রয়েছে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন নিয়মিত ডাব খাওয়ার এতে প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
কারণ ডাবের পানিতে রয়েছে ভিটামিন সি ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম আয়রন আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। এইজন্য চিকিৎসকরা গর্ভবতী মায়েদের ডাব খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদি গর্ভবতী মায়ের উচ্চ ব্লাড প্রেসার থেকে থাকে তবুও তবুও ডাব খেতে বলেন। আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
ডাব খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আমরা যেকোনো ধরনের খাবার নিয়ম অনুযায়ী এবং পরিমাণ মতো খেয়ে থাকি।এতে আমাদের শরীর সম্পূর্ণ পুষ্টি উপাদান পায়।ডাব খাওয়ার ক্ষেত্রেও আপনি সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে নিয়মিত ডাব খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে ডাবের সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণাগুন পাবেন। তাহলে চলুন জেনে নিন ডাব খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।
- আপনারা চেষ্টা করবেন একদম কচি এবং টাটকা ডাব খাওয়ার। কারণ ডাবের বয়স বেশি হলে ডাবের মধ্যে প্রাকৃতিক চিনির উপাদান বৃদ্ধি পায় যা গর্ভবতী মা খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে।
- আপনারা চেষ্টা করবেন ডাবের পানি একটু বেলা হলে খাওয়ার এতে ঠান্ডা লাগা সম্ভাবনা থাকে না।
- অথবা আপনারা যদি বাহিরে যান সেক্ষেত্রে বাহিরে থেকে এসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এরপরে ডাবের পানি খান এতে ভালো উপকার পাবেন।
- তাছাড়াও ডাব কাটার পরে সাথে সাথে ডাবের পানি খেয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে ডাবের পানি খাবেন না এতে উপকারিতা অনেক কমে যায়।
- ডাবর পানির সঙ্গে অন্যান্য পানীয় অথবা চিনি গুড় মিষ্টি জাতীয় কোন দ্রব্য মিশাবেন না এতে ডাবের পুষ্টি গুনাগুন নষ্ট হয়।
- অতঃপর ডাবের পানি খাওয়ার তেমন নির্ধারিত কোন সময় নেই আপনার সুবিধামতো ডাবের পানি খেতে পারে।
সম্মানিত পাঠক, আশা করছি আপনারা ডাব খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। নিয়মগুলো মেনে আপনি ডাব খেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন।
লেখকের মন্তব্য গর্ভাবস্থায় ডাব খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাব খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন। কখন ডাব খেলে সঠিক পুষ্টি গুনাগুন পাওয়া যায়। তবে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। একজন গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য ডাবের পানি কতটা প্রয়োজন আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
এমন নিত্য নতুন তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের জুথি আর্টস আইটি ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। সুস্থ ও ভালো থাকতে আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন।
জুথি আর্টস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url