আমের ২৫ টি উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - আমের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম
আমের ২৫ টি উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কিন্তু আমরা কমবেশি সবাই জানে আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আপনারা কি জানেন আমে কোন অ্যাসিড থাকে যদি না জেনে থাকেন তাহলে এক্ষুনি এই আর্টিকেলটি পড়ে নিন। গ্রীষ্মকালীন ফল হল আম দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু।
পুষ্টিগুনে ভরপুর অন্যতম একটি ফল আম। আম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কম রয়েছে। আম খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করব। এবং পাকা আম কোন অ্যাসিড থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আমের ২৫ টি উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - আমের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম
আম খাওয়ার উপকারিতা
আম খাওয়ার উপকারিতা যে অনেকেই জানেন তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। আমাদের দেশের খুব জনপ্রিয় একটি মৌসুমী ফল। দেখতে যেমন সুন্দর পাশাপাশি খেতে তেমনি সুস্বাদু এর পুষ্টিগুনো অনেক। ঠিক সেই কারণে আমকে ফলের রাজা বলা হয়। কারণ এই গ্রীষ্মকালীন ফল আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় সকল ভিটামিন খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। শরীরে সকল পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে আমি যথেষ্ট। তাহলে চলুন আম খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- পেটের হজম সহজ করে দেয়
- ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- রক্তস্বল্পতা দূর করতে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- হৃদযন্ত্র সচল রাখে।
- এমনকি নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে।
- চুলকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করে তোলে।
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আম খুব উপকারী।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সারের প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রাখে।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে।
- শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে রাখে।
- লিভার পরিশুদ্ধ করে।
- মানসিক চাপ ও বিষাদ দূর করে।
- হাড় শক্ত ও মজবুত করে।
- বেস্ট ফিডিং মায়েদের জন্য খুব উপকারী।
- শরীরের প্রদাহ কমায়।
- ওজন কমাতে আম খুব উপকারী।
- হিটস্ট্রোক দেখাতে সাহায্য করে।
- বডিস্ক্রাব হিসেবে আম কার্যকরী।
- ভালো ঘুমের জন্য আম উপকারী।
- দাঁতের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে।
- শারীরিক ক্ষয় রোধ করে।
- শরীরে লোহিত কণিকা তৈরি করে।
- ফুসফুস ও মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
- শরীর মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে।
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে।
পাকা আম খাওয়ার অপকারিতা
পাকা আমের উপকারিতা ও রয়েছে। আম খাওয়ার না না ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এ কথা ঠিক। কিন্তু আপনি যদি নিয়ম না মেনে সঠিক পরিমাণ মতো আম না খান। তাহলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে পাকা আম খাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাহলে চলুন জেনে আসি।
- শরীরে রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ওজন বৃদ্ধি পাবে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
- অতিরিক্ত গরমে প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ আম খেলে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- অনেকের আবার অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে এলার্জির প্রবণতা বেড়ে যায়।
- এই আমের সিজনে অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে ত্বকে ব্রণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে দাঁতের ক্ষয় হয়।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে হঠাৎ করে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে শরীরের শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
- পানি শূন্য তার ঘাটতি দেখা দেয়।
- কোলেস্টেরলের ভারসাম্য নষ্ট করে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে লিভার ও কিডনির উপর চাপ পড়ে।
- তাছাড়াও বর্তমান সময়ে রাসায়নিক দিয়ে আম পাকানোর ফলে অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- পেট ব্যথা বদ হজম আর বিভিন্ন ধরনের পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে আমবাত হতে পারে।
- আমেতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকার কারণে হাড় ও যকৃতের কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে মুখে চুলকানি ফোসকা পড়া,জিভে জ্বালাপোড়া করা ইত্যাদি উপশম দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে শরীর গরম করে এবং অস্বস্তি বোধ হয়।
- সঠিক পরিমাণে আম না খেলে আপনার শরীরের বাতের ব্যথা বা আর্থাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সম্মানিত পাঠক, আশা করছি আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কের জানতে পেরেছেন। সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ মতো আম খেলে এই অপকারী দিকগুলো এড়ানো সম্ভব।
পাকা আমে কোন এসিড থাকে
পাকা আমের কোন কোন এসিড থাকে জানেন কি আমরা সকলেই আম খাই কিন্তু এই বিষয়ে আমাদের সম্মুখে কোন ধারণা নাই বললেই চলে। তাহলে জেনে রাখুন আমে মূলত সাইট্রিক এসিড থাকে। যা আমি স্বাদ ও ঘ্রাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়াও টারটারিক ও ম্যালিক এসিড ও রয়েছে সামান্য পরিমাণে। সাইট্রিক অ্যাসিড একটি প্রাকৃতিক অর্গানিক এসিড।
এই অ্যাসিড থাকার কারণে যেকোনো ফলের স্বাদকে অম্বল বা টক করে তোলে।তবে যখন আম পাকে তখন এই এসিডের পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে। আম পাকলে তাতে গ্লুকোজ ফ্রুকটোজ এবং সুক্রোজ পরিমাণ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এজন্য প্রাকৃতিক সুগার এনে টক প্রভাব কমিয়ে মিষ্টি স্বাদ তৈরি করে। তাছাড়াও ম্যালিক এসডি সাধারণত সব ধরনের ফলেই থাকে।
কারণ ম্যালিক এসিড ফলের টক স্বাদ অটুট রাখে। যে ফলের এই এসিডের পরিমাণ কম যে ফল খেতে মিষ্টি লাগে। তাছাড়াও টারটারিক অ্যাসিড আমের আসি আম্লতার জন্য দায়ী। তো আমের উপস্থিতিতে খুব সামান্য পরিমাণ থাকে। প্রাকৃতিক এই এসিডের কারণে শরীর হজম করতে সাহায্য করে। এবং ভিটামিন সি এর সঙ্গে মিল রেখে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে।
তাছাড়াও সাইট্রিক অ্যাসি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা আমাদের শরীরের কোষের রোধ করতে সহায়ক।এইজন্য পাকা আম খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি উপাদান হলো আম।
আম খাওয়ার সঠিক সময়
আম খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি? আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। কিন্তু আমি শুধু খেলেই চলবে না। বরং আম খেয়ে এর উপকারিতা পেতে আপনাকে সঠিক সময় মেনে আম খেতে হবে তাহলেই আমি সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পাবেন।এবার চলুন জেনে নিন আম খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে।
- সকালবেলা খাবার খাওয়ার পরেঃ সকালে খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে আম খাওয়ার সঠিক সময় কারন এই সময় আম খেলে হজম শক্তি সবচেয়ে বেশি থাকে।ফলে আম থাকা চিনি পরিমাণ শরীরে সঠিকভাবে শোষিত হয় এবং চর্বি হিসেবে জমা হয় না। তবে আপনারা চাইলে সকালের নাস্তায় সামান্য পরিমাণে আম খেতে পারেন।
- দুপুরে খাওয়ার আগেঃ বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে দুপুরের এক ঘন্টা আগে আম খাওয়ার ধুম পরে। কারণ গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরম থাকে থাকার কারণে। বাহির থেকে এসে প্রায় সবাই এই সময় আম খেয়ে থাকে। সবাই বলে এ সময় আম খেলে অতিরিক্ত গরম বের হয়ে যায়। এই জন্য দুপুরে খাবার খাওয়ার আগে আম খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- বিকালের হালকা নাস্তা হিসেবেঃ বিকেলে আমরা হালকা পাতলা প্রায় সবাই নাস্তা করে থাকি। সময়ে অন্যান্য তেলে ভাজা খাবার না খেয়ে আপনি চাইলে পাকা আম অথবা কাঁচা আম বিকালের নাস্তা হিসেবে নিতে পারেন। বিকেলবেলা আম খেলে শরীরে শক্তি বেড়ে যায় মন ভালো থাকে। তবে আপনি চাইলে আমের সাথে বাদাম জাতীয় কোন খাবার রাখতে পারেন।
- দিনে অন্যান্য সময়ঃ আপনি চাইলে দিনে একটি আম যেকোনো সময়ে খেতে পারবেন এতে আপনার শরীরে কোন রকম ক্ষতি হবে না।
যে সময় আম খাওয়া এড়িয়ে চলবেনঃ
- সকালে খালি পেটেঃ আমরা অনেকেই আছি যে না বুঝে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে আম খেয়ে থাকি। এই ভুল কাজ মোটেও করবেন না। সকালে খালি পেটে আম খাওয়ার ফলে আপনার গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি হতে পারে।এবং শরীরের পরিপাক ক্রিয়া মারাত্মক ভাবে বেহাত হতে পারে। যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে আজ বেড়ে যাবে। খালি পেটে আম খাওয়ার ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে।
- রাতে খাওয়ার পরেঃ স্বাভাবিকভাবে রাতে ভারী খাবার খাওয়া উচিত নয়। কারণ রাতের দিকে হজম শক্তি অনেকটা কমে আসে। আম যেহেতু প্রাকৃতিক সুগার রয়েছে তাই রাতে আম খেলে পেটে হজমের সমস্যা হতে পারে। এতে আপনার গ্যাস বা অম্বল হতে পারে।এই জন্য রাতে খাবার খাওয়ার পরে আম খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
সম্মানিত পাঠক, আম খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে আপনাদেরকে জানিয়ে দিলাম। আশা করছি আপনারা সঠিক সময়ে আম খাওয়ার চেষ্টা করবেন এতে আপনার শরীরে উপকার মিলবে।
আম খেলে কি ওজন বাড়ে
আম খেলে কি ওজন বাড়ে? এই প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন।আবার অনেকেই আছেন যারা ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে আমের সিজনে আম খাওয়াই ছেড়ে দেন।দেখুন আম খেলে যে আপনার ওজন বাড়বে বিষয়টা এমন না। বড় আপনার ওজন বাড়ার বিষয়টি নির্ভর করবে। আপনি প্রতিদিন কি পরিমান আম খাচ্ছেন, এবং কখন খাচ্ছেন সম্পূর্ণ এর উপর নির্ভর করবে।
আপনারা দৈনন্দিন জীবনের ক্যালোরি চাহিদা কত এবং আপনি প্রতিদিন কতটুকু শারীরিক পরিশ্রম করেছেন তার ওপর নির্ভর করবে আপনার ওজন বাড়াবা কমা। আমে সাধারণত প্রাকৃতিক সুগার, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপাদান আরো অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি উৎপাদন রয়েছে।
যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে আমে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি ও ক্যালোরি রয়েছে। আপনারা কি জানেন বিশেষ করে একটি মাঝারি আমে প্রায় ২০০ গ্রাম ক্যালোরি থাকে। এইজন্য নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত পরিমাণে আম খেলে আপনার শরীরের দৈনিক ক্যালরির গ্রহণের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
আবার সেই ক্যালোরি যদি কোন ভাবে খরচ না হয় আপনি যদি কোন শারীরিক পরিশ্রম না করেন। তাহলে সেই অতিরিক্ত ক্যালরি আপনার শরীরে চর্বি হিসেবে জমতে থাকবে। আর আপনি যদি প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করে থাকেন বা ব্যায়াম করেন তাহলে আর চর্বি জমতে পারবে না।আপনি যদি না করতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার ধীরে ধীরে ওজন বেড়ে যাবে।
কিন্তু আপনি যদি সঠিক সময় সঠিক পরিমাণে আম খেয়ে সুষম খাদ্য খেয়ে থাকেন। এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। আপনার ওজন বাড়ার কারণ নির্ভর করবে আপনার উপর আপনি কতটা পরিমাণে আম খাচ্ছেন এবং আপনার সার্বিক জীবনযাপন কেমন তার উপর।
পাকা আমে কি কি ভিটামিন আছে
আমরা অনেকেই জানিনা পাকা আমে কি কি ভিটামিন আছে? আম খাওয়ার পাশাপাশি আমে টাকা ভিটামিন গুলো সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা উচিত।পাকা আমে না না ধরনের ভিটামিন রয়েছে। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এর উপাদান থাকে। যা আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
তাছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এবং ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আরো রয়েছে ভিটামিন ই পাকা আমে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে আমাদের শরীরে কাজ করে। এবং শরীরের কোষগুলোকে সুস্থ রাখে। তবে পাকা আম ভিটামিন কে এর উপাদান অল্প পরিমানে রয়েছে। যার রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়া হিসাবে কাজ করে।
পাকা আমে আরো রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যে থায়ামিন নিয়াসিন পাইরিক্সিন এবং ফোলেট।এই উপাদান গুলো আমাদের শরীরে চাওতন্তের সঠিক কার্যকারিতা বাড়াতে এবং শক্তি উৎপাদনে জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়াও পাকা আমে আরো রয়েছে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ একটি প্রাকৃতিক উৎসব। যা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।
পাকা আমের এসব ভিটামিন আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গ পত্যঙ্গের সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। তবে প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় পাকা আম রাখলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। আশা করছি সবাই জানতে পেরেছেন পাকা আমে কি কি ভিটামিন থাকে।
আমের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে
আমের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। আম খাওয়ার নানন স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা আমরা এতক্ষণ জেনেছি। এবার আমরা জানবো আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। তাহলে চলুন প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আম কি পরিমান পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা নিজের ছকের মাধ্যমে দেখে নিন।
১০০ গ্রাম পাকা আমের পুষ্টির উপাদান সমূহ
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
ক্যালরি | ৯০ |
ক্যারোটিন | ২৭৪ মাইক্রোগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১৪ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ১৪ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ৪২ মিলিগ্রাম |
জলীয় অংশ | ১.৬ গ্রাম |
ফাইবার | ১২ মিলিগ্রাম |
আমিষ | ৪.৩ মাইক্রো গ্রাম |
শর্করা | ৫২ মাইক্রোগ্রাম |
কপার | ১৩.৪ গ্রাম |
পটাসিয়াম | ১.৮৩ গ্রাম |
ভিটামিন বি-৬ | ৪২ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন এ | ১৬৮ মিলিগ্রাম |
শ্বেতসার | ০.৬ মিলিগ্রাম |
প্রোটিন | ১.৯৮ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.০৮ মিলিগ্রাম |
খনিজ লবন | ০.৯ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ৩৬.৪ মিলিগ্রাম |
রিবোফ্লাভিন | ০.৯ গ্রাম |
থায়ামিন | ০.০৮ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি-১ | ০.২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি-২ | ০.৯ মিলিগ্রাম |
আম পাকলে হলুদ হয় কেন
আম পাকলে হলুদ হয় কেন? আপনারা বলুন তো,আম পাকলে হলুদ হয় কারণ এটি একটি প্রাকৃতিক ও জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফল। কাঁচা আমের রং সাধারণত সবুজ হয়। কারণ এতে উচ্চ পরিমাণ ক্লোরোফিল নামক সবুজ রঞ্জন পদার্থ থাকে।কিন্তু কাঁচা আম যত পরিপক্ক হতে থাকে। ঠিক তখনই এই ক্লোরোফিল ধীরে ধীরে ভেঙ্গে যেতে থাকে।
এভাবেই আমের রং যত হলুদ হতে থাকে ক্লোরোফিলের পরিমাণ ধীরে ধীরে ঠিক ততটাই কমে যেতে থাকে। ঠিক তখনই স্বাভাবিকভাবে ক্লোরোফিলের জায়গায় ক্যারোটিন, জ্যানথোফিল ও অন্যান্য রঞ্জক পদার্থ গঠিত হতে থাকে। স্বাভাবিকভাবে এই পদার্থগুলোর জন্যই আম পাকলে হলুদ হয়ে যায়। এই পদার্থগুলো শুধুমাত্র রং পরিবর্তন করেই না বরং পাকা আমের বা ফলের স্বাদ ও ঘ্রাণ বা পুষ্টি গুণের পরিবর্তন আনে।
তাছাড়াও আম পাকার মধ্যে এনজাইনের সাহায্যে কিছুটা রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। যেমন প্রাকৃতিক চিনি এড হয়। এবং অ্যাসিডের পরিমাণ কমতে থাকে ফলে আম খেতে মিষ্টি প্রকৃতির হয়। এভাবেই আম পাকলে রং গন্ধ এবং স্বাদের ও পরিবর্তন চলে আসে আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আম পাকলে কেন হলুদ হয়।
কাঁচা আম টক কিন্তু পাকা আম মিষ্টি কেন
কাঁচা আম টক কিন্তু পাকা আম মিষ্টি হয় কেন জানেন কি আপনারা? এর পেছনে রয়েছে প্রাকৃতিক রাসায়নিক পরিবর্তন। কাঁচা আমে সাইট্রিক,টারটারিক এবং ম্যালিক এসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। এইজন্য কাঁচা আম খেতে টক প্রকৃতির হয়ে থাকে। তবে আম যখন পরিপূর্ণ হতে থাকে।তখন ধীরে ধীরে এই এসিড গুলোর পরিমাণ তুলতে শুরু করে। সেই সাথে আমি থাকা স্টার্চ বা শ্বেতসার ও শর্করায় রূপান্তরিত হয়।
এই শর্করা গুলোর মধ্যে গ্লুকোজ সুক্রোজ ও ফ্রুকটোজ থাকে অনেক বেশি পরিমাণে। যা আমাকে মিষ্টি স্বাদ যুক্ত করে। ফলে স্বাভাবিকভাবে পাকা আমের এসিড কমে গিয়ে মিষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ঠিক এই কারণে পাকা আম খেতে মিষ্টি লাগে এবং কাঁচা আম খেতে টক প্রকৃতির হয়। অন্যতম কারণ হলো রাসায়নিক উপাদানের পরিবর্তন এবং শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি যার ফলে এই পরিবর্তন ঘটে কি করছে। আশা করছি, আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে চলছে আমের মৌসুম গ্রীষ্মকাল বা মধুমাস। আর এই মধুমাস মানে কিন্তু চারিদিকে আম খাওয়ার ধুম পড়ে গিয়েছে। তাছাড়াও আম স্বাদ গন্ধ ও পুষ্টির দিক থেকেও আম অন্যান্য ফলের থেকে সেরা একটি ফল।
সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে আমকে ফলের রাজা হিসেবে ধরা যায়। আপনারা হয়তো জানেন কাঁচা আম্বা পাকা আম উভয় আমাদের শরীরের পক্ষে খুব ভালো। তবে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আম খেতে হবে সঠিক সময়েই এবং নিয়ম মেনে। তাছাড়াও গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরমে তাপদাহ থেকে শারীরিক প্রশান্তি পেতে রসালো আমের জুড়ি মেলা ভার।
এইজন্য আপনারা সুস্থ থাকতে হলে সঠিক পরিমাণে সঠিক সময়ে আম খাবেন এতে আপনার স্বাস্থ্য উপকার হবে।আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার মহামূল্যবান সবাই নষ্ট করে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জুথি আর্টস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url