কুরবানী কাদের জন্য ওয়াজিব এবং গোশত বন্টনের সঠিক নিয়ম
কুরবানী কাদের জন্য ওয়াজিব এবং গোশত বন্টনের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আপনি যদি এ বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য সম্পূর্ণ বিষয় জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কি পরিমাণ সম্পদ হলে আপনার উপরে কুরবানী ওয়াজিব হবে।
তাছাড়াও অনেকের টাকা রয়েছে কিন্তু কুরবানী ওয়াজিব নয়, কেন জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কুরবানী কাদের জন্য ওয়াজিব এবং গোশত বন্টনের সঠিক নিয়ম
কুরবানীকাদের উপরে ওয়াজিব
কুরবানী কাদের উপর ওয়াজিব এবং কুরবানীর গোশত বন্টনের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি, আবার বেশিরভাগ মানুষই জানে না। আমরা অনেক সময় জেনে না জেনে ভুল করে থাকি তবে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে তাহলে চলুন দেরি না করে আজকের মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
কুরবানী মুসলিম উম্মতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি ইসলামের বিধানবলির মধ্যে অন্যতম,হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম প্রতিবছরে কোরবানি করতেন। তবে যাদের উপর যাকাত ওয়াজিব তাদের উপর কোরবানিও ওয়াজিব। এতে গরিব-দুঃখী পাড়া প্রতিবেশীদের একটু আপায়নের ব্যবস্থা হয়। এতে আল্লাহর ভালোবাসায় নিজের সব চাহিদা ও যুক্তি কুরবানী ত্যাগ করার শিক্ষা রয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন হে রাসুল! আপনি বলুন,আমার নামাজ আমার কোরবানি আমার জীবন, আমার মরণ, ও বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত করলাম। প্রত্যেকটি বয়স প্রাপ্ত মুসলমানদের সাড়ে সাত ভরি সোনা অথবা ৫২ ভরি রুপ ওই সমমূল্যের পরিমাণে সম্পদ বা নগদ টাকা অর্থ অথবা ব্যবসা বাড়ি গাড়ি থাকলে অবশ্যই তার উপর বাণী ওয়াজিব হবে।
তাছাড়াও প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি অতিরিক্ত পরিমাণে আসবাবপত্রের মালিক হলে অবশ্যই তাকে কুরবানী দিতে হবে। তবে সোনা রুপা কিংবা টাকা পয়সা এগুলো যদি একত্রিত করে সমপরিমাণ না হয়। তবে অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে ৫২ ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় তাহলে তার ওপর কুরবানী করা ওয়াজিব। যেমন ধরুন কারো কাছে কিছু স্বর্ণ এবং কিছু টাকা আছে যা একত্রিত করে সাড়ে ৫২ ভরি রুপার সমমান মূল্যের হয়ে যায় তাহলে তার ক্ষেত্রেও কোরবানি ওয়াজিব।
শুধু আপনি যদি এই তিনদিনের জন্য নিশাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন তাহলে কোরবানি আপনার জন্য ওয়াজিব হবে।তাছাড়াও আপনি যদি ১২ তারিখে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগে যদি আপনি নিশাব পরিমাণের সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন,সে ক্ষেত্রেও আপনার উপরে কুরবানি ওয়াজিব হবে।( বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৬২) অনেকে উপর কোরবানি দোয়া ওয়াজিব নয়, তবুও তারা ঋণ করে হলেও কোরবানি দিয়ে থাকেন এমনটি করা অনুচিত।
তাছাড়াও অনেকে এই ভেবে কুরবানী দেন যে কুরবানীর দিনে আমার সন্তানেরা কার মুখের দিকে চেয়ে থাকবে। এমন চিন্তা করে আপনি যদি কুরবানী করে থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনার কুরবানী হবে না, শুধুমাত্র গোস্ত খাওয়াই হবে। কুরবানী মূলত ধনী ব্যক্তিদের ইবাদত। যেমন ধরুন যারা হজ করে তাদের জন্য যাকাত দেওয়া ওয়াজিব। কারণ ধনী ব্যক্তিরা পাপাচারনের প্রতাণতা বেশি দেখা যায়। তাদের জন্য বিশেষ এই ইবাদতের বিধান দেয়া হয়েছে।
যাতে তারাও এটুকুই ইবাদত করে পাপমুক্ত জীবনে ফিরে আসতে পারে। ধরুন একটি পরিবারে অনেকগুলো সদস্য রয়েছে যা বাংলায় বলা হয় ৫১ ভুক্ত পরিবার, এই পরিবারে একাধিক ব্যক্তির কাছে প্রচুর পরিমাণ সম্পদ বা টাকা-পয়সা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে কুরবানী ওয়াজিব। (কিফায়াতুল মুফতি: ৮/১৭৮) অথবা আলাদা আলাদা শরিক একসাথে কোরবানি করলে গোশত ওজন করে বন্টন করতে হবে।
আইডিয়া বা অনুমান করে গোশত বন্টন করা জায়েজ নেই। তবে মাথা পা অথবা হাড্ডি সে ক্ষেত্রে আপনি অনুমান করে ভাগ করতে পারবেন। এতে সামান্য কম বেশি হলে কোন সমস্যা হবে না।(ফাতাওয়া কাজিখান :৩/৩৫১)
সম্মানিত পাঠক,আশা করছি আপনারা জানতে পেরেছেন কুরবানী কাদের জন্য ফরজ এবং কিভাবে কুরবানী করলে কুরবানী হবে। এ বিষয়ে আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে।উপরিউক্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়লে আপনি সম্পূর্ণ বিষয়ে জানতে পারবেন।
কুরবানী বিশুদ্ধ হওয়ার শর্তা বলি
কুরবানী হলো মুসলমানদের একটি ইবাদত। তবে এটি মন থেকে আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্যে হতে হবে। অন্য কাউকে দেখানোর উদ্দেশ্যে কুরবানী হবে না। এই ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। আর তা না হলে আল্লাহ তাআলার কাছে কুরবানী কবুল হবে না। আমরা মূলত একটি গরু সাতটি ভাগে কুরবানী দিয়ে থাকি। কারণ একটি গরু কুরবানী দেওয়ার সামর্থ্য হয়তো সবার থাকে না।
এইজন্য আমরা অংশীদার খুঁজি, এই বিষয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ অংশীদার যদি নিয়ত এবং পরিশুদ্ধ না থাকে অর্থ যদি হালাল না হয় সেক্ষেত্রে বাকি অংশীদারদেরও কোরবানি নষ্ট হয়ে যাবে। এইজন্য চেষ্টা করবেন যাচাই বাছাই করে অংশীদার নির্বাচন করতে। তাছাড়াও ধনসম্পদ দানের মালিক আল্লাহ তায়ালা তার উদ্দেশ্যে কিছু করলে অবশ্যই মন দিয়ে করতে হবে।
আপনার অনেক ধনসম্পদ রয়েছে বলে আপনি দেখানোর জন্য কোরবানি দিবেন কুরবানী জায়েজ হবে না। আপনার অর্থ কড়ি হালাল হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। আপনার হারাম অর্থের ইবাদত শুদ্ধ হবে না। আর আপনি যদি হারাম অর্থ দিয়ে ইবাদতের আশা করেন, সে ক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবে। আপনি যদি আপনার হালাল অর্থ দিয়ে ছোটখাটো পশুর ব্যবস্থা করেন। এটি আল্লাহর কাছে প্রযোজ্য হবে।
মহান আল্লাহতালা বলেন, আল্লাহতালার কাছে না কুরবানীর পশুর গোশত পৌঁছায় না, রক্ত পৌঁছায় তার কাছে পৌঁছায় আপনার তাকওয়া। (সূরা হজ, আয়াত:৩৭) কোরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে কি কি নিয়ম মেনে কোরবানি দিতে হবে এ সম্পর্কে আপনারা আশা করছি জানতে পেরেছেন।
কোন কোন পশু দিয়ে কুরবানী হবে না
কুরবানী পশুর বৈশিষ্ট্য ক্ষেত্রে আমরা গরু, মহিষ, দুম্বা, উট, ভেড়া,ছাগল দ্বারা কুরবানী করা জায়েজ। তাছাড়া অন্যান্য পশু দ্বারা কোরবানির জায়েজ নয়। তবে এই ছাগল ভেড়া দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে, গরু মহিষের অবশ্যই পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে তাহলে কুরবানী জায়েজ হবে। আর যে পশুগুলো ক্ষেত্রেকুরবানি জায়েজ হবে না মধ্যে ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেওয়া যাবে না।তাহলে চলুন আমরা জেনে আসি,
- দৃষ্টিশক্তি না থাকা
- শ্রবণ শক্তি না থাকা
- অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ- শীর্ণ হওয়া।
- চলতে অক্ষম অথবা লেংড়া হওয়ার কারণে জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে না পারা।
- জন্মগতভাবে কানা হওয়া
- লেজের বেশিরভাগ অংশ কাটা
- কানের বেশিরভাগ কাটা রয়েছে।
- ঘোড়াসহ সিং উপরে যাওয়া
- পাগল হওয়ার কারণে ঘাস ও পানি ঠিকমতো না খাওয়া।
- রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যায়া।
- বেশিরভাগ দাঁত না থাকা।
- ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা রয়েছে।
- গরু বা মহিষ চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা।
- যেকোনো রোগে আক্রান্ত পশু কুরবানী জায়েস হবে না। মোট কথা হলো কোরবানির পশুর বড় কোন ধরনের দোষ ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে হবে না হলে কুরবানীর জায়েজ হবে না। তার মধ্যে চারটি কারণে একদমই হবে না যেমন অন্ধ যা স্পষ্ট দেখা যায়, বড় রোগে আক্রান্ত, পঙ্গু যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট, কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেছে এমন পশুর ক্ষেত্রে কোরবানি জায়েজ হবে না। (ইবনে মাজাহ,হাদিস: ৩১৪৪)
কুরবানির প্রয়োজনীয় ৭০টি মাসয়ালা
কুরবানী প্রত্যেকটা মুসলিম ব্যক্তির জন্য একটি বড় ইবাদত। তবে আমরা অনেকেই পর্যাপ্ত সামর্থ্য না থাকার কারণে অনেকেই এই ইবাদত থেকে বঞ্চিত হই, আপনারা মাসয়ালা সম্পূর্ণ পড়লেই বুঝতে পারবেন করার কুরবানী করার নিয়ম সম্পর্কেকুরবানী করার বেশ কিছু মাসয়ালা রয়েছে তাহলে চলুন আমরা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।
- কুরবাণী কার উপর ওয়াজিব যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে অথবা সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ রয়েছে। অথবা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা রয়েছে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
- তিন দিনের মধ্যে কোন দিন কুরবানী করা উত্তম, ১০ তারিখে প্রথম দিন।
- কুরবানীর মেয়াদ কত দিন, তিন দিন, জিলহজ্জ মাসের ১০,১১,এবং ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
- একটি নাবালকের নিশব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না।
- যদি নাবালকের এর নিছাব পরিমাণ সম্পদ হয় তার পক্ষে কুরবানী দেওয়া মুস্তাহাব হবে, ওয়াজিব না।
- বালক সুস্থ মস্তিষ্কের না হলে নিসাব পরিমাণে সম্পদ আছে তার ওপরে কুরবানী ওয়াজিব হবে কি, হবে না।
- দারিদ্র লোকের উপর কুরবানি ওয়াজিব কি ওয়াজিব হবেনা। তবে যদি কুরবানীর নিয়তে পশু কিনে তখন সেই পশু কোরবানি করা ওয়াজিব হয়।
- কোন ব্যক্তি যদি কোরবানির দিনগুলোতে কুরবানী দিতে পারেননি কোন সমস্যার কারণে কিন্তু তার নিশাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে।সেক্ষেত্রে একটা ছাগলের সমপরিমাণ টাকা সদকা দিতে হবে।
- তাছাড়াও কুরবানির পশু কিনে তিন দিনে কুরবানী দিতে পারেনি কোন সমস্যার কারণে সে ক্ষেত্রে ওই পশু সদকা করে দিতে হবে।
- প্রথম দিন কখন থেকে কুরবানী করা উচিত, যদি কোন এলাকায় জুম্মার নামাজ এবং ঈদের নামাজ ওয়াজিব হয়। সেই এলাকায় ঈদের নামাজের আগে কুরবানী করা জায়েজ নেই। তবে কোন প্রকার সমস্যা হলে ঈদের নামাজ না পড়া গেলে তাহলে সূর্য মধ্য আকাশ অতিক্রম করার পরে কুরবানী করা জায়েজ হবে।
- কোন সমস্যার কারণে রাতে কুরবানী দিলে হবে তবে ১০/১১ তারিখে দিলে হবে কিন্তু ১২ তারিখ রাতে দিলে হবে না।
- কোন কোন পশু কুরবানী দেওয়া জায়েজ যেমন গরু, মহিষ,ছাগল, ভেড়া,উট এবং দুম্বা।
- পশুদের লিঙ্গের মধ্যে ভেদাভেদ করতে হবে কি এক্ষেত্রে নয় মহিলা এবং পুরুষ উভয়তেই হবে।
- পশুদের বয়স কেমন হলে কোরবানি দেওয়া জায়েজ হবে, গরু মহিষ দুই বছর পূর্ণ হতে হবে, এবং উটের কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। ছাগল, ভেড়ার ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে।
- উট গরু মহিষ এর ক্ষেত্রে শরীর সাত জন হওয়া যায়। কিন্তু একা দেওয়া উত্তম, আর ছাগল দুম্বা ভেড়া ক্ষেত্রে একজন শরিক হওয়া যায়।
- শরিকের মাঝে যদি কেউ গোশত খাওয়ার জন্য নিয়ত করে তাহলে কারো কুরবানী হবে না।
- গোশত এর ভাব সমপরিমাণ না হলে কুরবানী হবে না।
- আপনারা চাইলে কুরবানী পশুতে আকিকা দিতে পারে তবে উট গরু এবং মহিষে।
- শরিকদের মধ্যে যদি কারো হারাম টাকা থাকে তাহলে সেই কুরবানী জায়েজ হবে না।
- আপনি যদি নিয়ত করেন একা কুরবানী দিবেন সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে অন্য কাউকে শরিক করা যাবে না একাই দিতে হবে।
- কুরবানী দেওয়ার জন্য সুস্থ সবল মোটাতাজা পশু নির্বাচন করা সুন্নত।
- পশুর মধ্যে যদি কোন রোগব্যাধি পঙ্গু পশু হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে কুরবানী হবে না।
- একটি পশুর দাঁত শিং লেজ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক থাকতে হবে তাহলে কুরবানির জন্য উপযুক্ত হবে তাছাড়া এগুলো না থাকলে কুরবানি জায়েজ হবে না।
- আপনি যদি কুরবানী করার নিয়তি পশু কিনে থাকেন। অতঃপর ঐ পশুটি যদি হারিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনার সামর্থ্য ভালো হলে অবশ্যই আরেকটি কিনে কুরবানী দিতে হবে। তবে গরিব হলে দিতে হবে না। আর যদি হারানো গরুটি আপনি আবার ফিরে পান এবং আরেকটি গরু কিনে ফেলেন আপনি যদি ধনী ব্যক্তি হন, সে ক্ষেত্রে দুইটি কুরবানী করায় উত্তম।
- অনেক সময় আপনারা কুরবানি পশু আগেই কিনে ফেলেন সেক্ষেত্রে এক পর্যায়ে এসে দেখা যায় পশুটি গর্ভবতী সে ক্ষেত্রে প্রশ্নটি কুরবানি করা জায়েজ রয়েছে।
- পশুটি কুরবানী করার পরে যদি বাচ্চাকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায় তাহলে বাচ্চাকে কুরবানী দিতে হবে।
- অনেক সময় কুরবানীর পশু কুরবানী করার আগে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়।তবে ওই সময় কুরবানী করা জায়েজ আছে, তবে এটা মাকরুহ!
- যেহেতু আমরা জানি পশুর দুই বছর বয়স না হলে কুরবানী করা জায়েজ নয়। সেক্ষেত্রে আপনি একটি পশু কিনলেন কিন্তু পরে জানবেন পশুটির বয়স দুই বছর পূর্ণ হয়নি তবে সে ক্ষেত্রে কুরবানি জায়েজ হবে। বিক্রেতা মিথ্যা কথা বলেছে বলে তার গুণাহ হবে।
- বন্ধা পশুর কুরবানি হবে।
- নিজের পশুকে নিজে কুরবানী করা উত্তম।
- কুরবানী করার জায়গা পরিষ্কার এবং দূষিত মুক্ত হতে হবে।
- কুরবানী করার সময় অনেক সময় কুরবানী করলে দেখা যায় কুরবানী সম্পন্ন হয়নি সে ক্ষেত্রে হুজুররা আবার তোর বাড়ি হাতে নিয়ে রাব্বা শিরা কাটতে যায়।এটি করা যাবে তবে বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার না বললে কুরবানী হবে না। একজনও যদি না বলে সে ক্ষেত্রে কুরবানী হবে না।
- কুরবানী পশুর চামড়া বিক্রি করে অনেক সময় নিজের কাছে রেখে দেন নিজের উপকারের আশায় তবে এটা করা জায়েজ নয়।
- আপনি যদি কুরবানির পশু কিনে চাষ করেন সেক্ষেত্রে ওই পরিমাণ টাকা সদকা করে দেওয়া উচিত।
- কুরবানী পশুর দুধ পান করা যাবে না।
- যদি দেখা যায় কুরবানীর পশুর দুধ দহ না করলে পশুটির কষ্ট হবে সেক্ষেত্রে দুধ দহন করে সদকা করে দেওয়া।
- আপনাদের মধ্যে একজন শরিক গরু কিনি যদি মারা যায় সেক্ষেত্র তার ওয়ারিশরা যদি বলে কুরবানি করুন সেক্ষেত্রে করতে পারবেন না হলে টাকা ফেরত দিতে হবে।পরবর্তীতে আপনারা অন্য একজন শরিক করতে পারেন।
- পশু কুরবানী করার আগে যদি বাচ্চা দেয় সেক্ষেত্রে বাচ্চাকে জীবিত সদকা করে দিতে হবে। এবং পশুটিকে কুরবানী করতে হবে।
- মৃত ব্যক্তির পক্ষে কুরবানী করা যাবে। গোশত করতে হবে। তাছাড়া তার বাড়ির লোক খেতে পারে।
- তিন দিনের বেশি কুরবানির গোশত খাওয়া যাবে। আপনার যতদিন ইচ্ছা আপনি গোশত খেতে পারেন।
- অনুমান করে গোশত বন্টন করা জায়েজ নেই।
- কুরবানীর গোশত মূলত তিন ভাগে ভাগ করা উত্তম। তবে এক ভাগ গরিব দুঃখীদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া। এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের আর তৃতীয় ভাগ কুরবানি যিনি দিয়েছে তার।
- অনেকে গোশতের চর্বি বিক্রি করে দেন এটি করা উচিত নয়।
- জবাইকারী বা কসাইকে গোশত দিলে হবে না আগে তাকে পারিশ্রমিক দিতে হবে। এরপরে আপনি নিজের ভাগ থেকে হাদিয়া হিসেবে গোশত দিতে পারেন।
- পশুটি জবাই এর কতক্ষন পরে চামড়া আলাদা করতে হয়। যখন পশুটি নিসতেজ হয়ে যায়।
- জবাই এর অস্ত্র ধারালো প্রকৃতির হওয়া উচিত।
- এক পশুর সামনে অন্য পশুকে জবাই করা উচিত নয়। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিষেধ করে গিয়েছেন।
- কুরবানীর গোশত অন্য ধর্মীয় ব্যক্তিদের কে দেয়া যাবে এতে কোন সমস্যা নেই।
- মুসাফিরের উপরে কুরবানী করা ওয়াজিব নয়।
- কুরবানি করা ওয়াজিব এমন ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করলে ওই ব্যক্তির থেকে অনুমতি নিতে হবে।
- কুরবানীর গোশত খাওয়ার উত্তম, তবে না খেলে গুনাও হবে না।
- কুরবানি ওয়াজিব এমন ব্যক্তি যদি ঋণ নিয়ে কুরবানী করেন সে ক্ষেত্রে কুরবানী হবে তবে যদি সুদের উপর ঋণ নেয় সেক্ষেত্রে হবে না।
- পাগল পশু দিয়ে কুরবানী হবে না।
- একজন হাজী যদি মুসাফির হয় তার ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
- খাসিকৃত পশু দিয়ে কুরবানী করা যাবে।
- বিদেশে থাকা ব্যক্তির কুরবানী দেওয়ার উপায় হলো ওনার পক্ষ থেকে বাড়ির কেউ কুরবানী দিলে হবে।
- পশুর চামড়া চাইলে নিজে ব্যবহার করতে পারবেন তবে বিক্রি করলে সদকা দিতে হবে।
- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর পক্ষ থেকে কুরবানী করা যাবে তবে যারা উত্তম সামর্থ্যবান তাদের জন্য। এটার গোশত সবাই খেতে পারবে।
- কুরবানী দিলে হাঁস মুরগি জবাই করা যাবে তবে কুরবানীর নিয়তে করা যাবে না।
- জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকেও কুরবানী করা যাবে।
সম্মানিত পাঠক বিন্দু আশা করছি আপনারা মাসায়ালা গুলো পড়ে উপকৃত হবেন। এ নিয়মে আপনারা কুরবানী করতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য কুরবানী কাদের জন্য ওয়াজিব
কুরবাণী মুসলমানদের একটি ইবাদত। তবে সবার ক্ষেত্রে এই ইবাদতটি পালন করা সম্ভব হয় না। কারণ কুরবানী সামর্থ্যবান মানুষদের জন্য প্রযোজ্য। যে মানুষের সাড়ে হাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা রয়েছে বা এর সমপরিমাণ টাকা অথবা অন্যান্য সম্পদে রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কুরবানি ওয়াজিব। প্রিয় পাঠক বিন্দু আর্টিকেল পড়ে আপনি অবশ্যই উপকৃত হবেন। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার ভালো লাগে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এমন তথ্যমূলক অথবা ধর্মীয় বিষয় আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আর কী বিষয়ে আর্টিকেল চান অবশ্য কমেন্ট করে জানাবেন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকবেন।
জুথি আর্টস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url